অতিবৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে চট্টগ্রাম মহানগরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাভাবিক পাঠদান কার্যক্রম আগামীকাল মঙ্গলবার বন্ধ থাকবে। প্রয়োজনে এই ছুটি বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। আজ সোমবার অধিদপ্তর থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস-পরীক্ষা আগামী ১০ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
মাউশির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন চট্টগ্রাম মহানগর এলাকায় অবস্থিত সব সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক পাঠদান কার্যক্রম মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ও নথিপত্র দুর্যোগ পরিস্থিতিতে বিশেষ ব্যবস্থায় সংরক্ষণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত কয়েক দিন ধরে চট্টগ্রামে অতিভারী বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে মানুষ দুর্ভোগে পড়েন।
আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, চলমান বৃষ্টির এমন অবস্থা আরও দুই দিন চলতে পারে। উপকূলীয় এলাকাসহ নদী বন্দরগুলোতে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সমুদ্রবন্দরে আগের মতোই ৩ নম্বর এবং নদীবন্দরে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেন, আগামী দুই দিন, অর্থাৎ ৮ ও ৯ আগস্ট দেশের আবহাওয়া এমনই থাকবে। তবে কোথাও কোথাও বৃষ্টির পরিমাণ কমে আসতে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, মৌসুমি বায়ুর অক্ষ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
আবহাওয়ার বিশেষ সতর্কবার্তায় বলা হয়, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি অব্যাহত রয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ কারণেই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হলো।
একইভাবে আজ দিনগত রাত ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারসহ বিভিন্ন এলাকার ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়োহাওয়াসহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নৌবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।