ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর নবজাতক ও প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় দুই চিকিৎসককে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সারাদেশে দুইদিন ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখা ও অস্ত্রোপচার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গাইনি চিকিৎসকরা। তাদের এ কর্মসূচিতে একাত্মতা জানিয়েছে চিকিৎসকদের অন্যান্য সংগঠন।
গত শনিবার গাইনি ও প্রসূতিবিদ চিকিৎসকদের সংগঠন অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনিকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি) এ কর্মসূচি ঘোষণা করার পর গতকাল সোমবার ও আজ মঙ্গলবার বেশিরভাগ মানুষ চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারে চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না। তবে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকরা সেবা চালিয়ে যাবেন বলেও জানানো হয়েছে।
চিকিৎসক সংগঠনগুলার নেতারা জানিয়েছেন, অনেক চিকিৎসক বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারেও রোগী দেখেন। সেসব চেম্বার বন্ধ থাকলে বেসরকারি হাসপাতালেও চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হবে।
সেন্ট্রাল হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন মাহবুবা রহমান আঁখি। এ সময় তার শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক ছিল বলেও চিকিৎসক জানিয়েছিলেন। নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমেই সন্তান প্রসব সম্ভব বলে আশ্বস্তও করেছিলেন ডা. সংযুক্তা সাহা। প্রসব ব্যথা ওঠায় গত ৯ জুন দিবাগত রাত ১২টা ৫০ মিনিটে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ডা. সংযুক্তার অধীনে মাহবুবাকে ভর্তি করা হয়। স্বজনদের অভিযোগ, ওইসময় ডা. সংযুক্তা সাহা দেশেই ছিলেন না, অথচ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, সংযুক্তা সাহা আছেন এবং ওটিতে (অপারেশন থিয়েটার) কাজ করছেন। অন্য চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা ব্যর্থ হলে তখন অস্ত্রোপচার করে বাচ্চা বের করা হয়। পরদিন মারা যায় শিশুটি। এতে আঁখির অবস্থাও শঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়ে।
ঘটনার পর তাকে পার্শ্ববর্তী ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১১ জুন দুপুরে সেখানে মারা যান তিনি।
ওই ঘটনায় ১৪ জুন ধানমন্ডি থানায় মোট ছয় জনের নাম উল্লেখসহ পাঁচ থেকে ছয়জনকে অজ্ঞাত আসামি করে “অবহেলাজনিত মৃত্যুর” অভিযোগ এনে একটি মামলা করা হয়। যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা ও ডা. মুনা সাহাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এখনও তারা কারাগারে আটক আছেন। জামিন চেয়ে করা তাদের একাধিক আবেদন নাকচ করে দিয়েছে আদালত।