আকাশে যখন আলো হেলে পড়েছে, তখনও সিনেমার দৃশ্য ধারণে ব্যস্ত “দ্যা রাইটার’ সিনেমার পুরো টিম। এর মধ্যেই ঝুম বৃষ্টি। ব্যাঘাত খোলা আকাশের নিচে শুটিংয়ে। এজন্য পুরো টিম চলে গেল আরেক দৃশ্য ধারণে থানার সেটে। অবসর সময় পেলেন সিনেমার নায়িকা অধরা খান। এক ফাঁকে কথা হয় তার সঙ্গে। প্রায় অর্ধযুগ ধরে চলচ্চিত্র পাড়ায় বিচরণ করা এই নায়িকার একাধিক সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। ব্যস্ত সময় পাড় করছেন নতুন সিনেমার কাজেও। কয়েকদিন পরেই মুক্তি পেতে যাচ্ছে তার আরেক সিনেমা “সুলতানপুর”।
দেশের সীমান্ত এলাকার রোমাঞ্চকর গল্প নিয়ে নির্মিত সিনেমা নিয়ে ভীষণ আশাবাদী অধরা। তার মতে, এই সিনেমা যেই দেখবে, মুগ্ধ হবে। পরবর্তীতে আবারও দেখতে চাইবে। তথ্য বলছে, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে “বর্ডার” নামে সেন্সর বোর্ডে জমা দেওয়া হয় সিনেমাটি। কিন্তু সিনেমায় “অসংগতি”র কথা বলে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেওয়া হয়। সেন্সর বোর্ডের নীতিমালা অনুযায়ী পরিমার্জন করে আবারও সিনেমাটি জমা দেওয়া যাবে। পরে কিছু দৃশ্যের পরিবর্তন-পরিমার্জন করে চলচ্চিত্রটি জমা দেয় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। এরপরেই মুক্তির ছাড়পত্র মেলে সিনেমাটির।
এটি মুক্তি পাবে আগামী ২ জুন।পরিচালক সৈকত নাসিরের সিনেমায় অধরা খান ছাড়াও সানজু জন, সুমন ফারুকী, আশিষ খন্দকার, রাশেদ মামুন অপু, বিলাশ খান, রুমান রুমি, শাহীন মৃধাসহ অনেকেই অভিনয় করেছেন। এরইমধ্যে আলোচনায় এসেছে সিনেমাটির ট্রেলার। যেখানে দেখা মিলেছে, উত্তেজনা, সংস্কৃতির মেলবন্ধন, রোমাঞ্চ ও অচেনা জগতের কৌতূহলী ঘ্রাণ। সীমান্ত এলাকার চোরাচালান, ক্ষমতা, মাদকপাঁচারসহ বহু কিছুর দেখা মিলেছে ট্রেলারে। ট্রেলারের দৃশ্যের কথা উঠে এলো অধরা খানের কথায়ও। অভিনেত্রী বলেন, “এই সিনেমার নাম প্রথম নাম ছিল ‘বর্ডার’। সিনেমার গল্পটাও তেমনই। তবে সেন্সরে যাওয়ার পর নাম বদলে ‘সুলতানপুর’ রাখা হয়েছে।” “সুলতানপুর’ সিনেমায় সীমান্ত এলাকার মানুষের বেড়ে ওঠা, ব্যক্তিজীবন, বাহ্যিক জীবন ও পেশাগত জীবনের গল্প উঠে এসেছে বলেও জানান তিনি। নামকরণের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, “আমরা যে এলাকায় কাজ করেছি। ওই এলাকার নাম ছিল ‘সুলতানপুর’। এই নামটি ইতিবাচক দিক তৈরি করেছে।”
সিনেমাটি অ্যাকশনধর্মী ও গল্প নির্ভর উল্লেখ করে অধরা খান বলেন, “এখন যেটির প্রচলন চলছে, ‘হাওয়া’, ‘পরাণ’ এগুলো সবই হচ্ছে জনজীবনের গল্প নিয়ে। সবাই ভিন্নধর্মী চলচ্চিত্র দেখছেন। প্রেম, ভালোবাসা বা গৎবাধা সিনেমা কম দেখছেন। ফলে আমাদেরও চেষ্টা ছিল, এমন কিছুই করার। আমাদের এই সিনেমা এমন ধরণেরই। গল্পের জন্য বেছে বেছে কাজ করছেন কি না এমন প্রশ্নে “সুলতানপুর’-এর নায়িকা বলেন, “এখন পুরো শিল্পে চলচ্চিত্র হচ্ছে ৫০টিরও কম। যেহেতু চলচ্চিত্র কমেছে। ফলে বেছে কাজ করার সুযোগ কম। এ কারণে যে চলচ্চিত্র আসছে, যেটিকে মনে হচ্ছে মানসম্পন্ন ও দর্শক গ্রহণযোগ্যতা পাবে সেটিতে কাজ করছি। কারণ কাজটা চালিয়ে যেতে হবে।” তিনি বলেন, “বলিউডের মতো বছরে একটি সিনেমা করে চলা কষ্টকর। আবার স্ক্রিনে থাকাটাও গুরুত্বপূর্ণ। বেছে কাজ করতে গেলে হারিয়ে যাচ্ছি কি না প্রশ্নও শুনতে হয়। ফলে এখন চেষ্টা করছি, মনোযোগ দিয়ে কাজটা করার। বাকিটা জবাব দেবে সাধারণ দর্শক।” চলচ্চিত্রে কাজ করার সু-পরিবেশ আছে কি-না প্রশ্নে অধরা খান বলেন, “পরিবেশ ভালো দেখেই কাজটা সহজ হয়েছে। এখানে আমরা নিজের বাড়ির মতো করেই কাজ করতে পারছি। তারচেয়ে বড় কথা যেখানেই কাজ করি, আগে সেই ইউনিট সম্পর্কে জেনে নেই। নিয়মিত কাজ করার ফলে এখানে সবাই পরিচিত। ফলে তারা আমাকে পরিবারের সদস্যদের মতোই দেখে।” অভিনেতা অভিনেত্রীদের কথার লড়াইকে কীভাবে দেখেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “কে কি কথা বলবে সেটি তার ব্যক্তিগত বিষয়। আর মন্তব্য যেই করুক, সেটি গুরুত্ব বহন করে। কাজ করলে ভালো বা মন্দ মন্তব্য আসবে। অনেকেই মন্তব্য করবেন। এটিকে ইতিবাচক হিসেবে নিতে পারাটাই গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ।”