এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মোহাম্মদ রহমাতুল মুনীম বলেছেন, জনস্বাস্থ্যের জন্য সুইটেন্ড বেভারেজ কম ক্ষতিকর নয়। কার্বোনেটেড বেভারেজ, সুইটেন্ড বেভারেজকে নিরুৎসাহিত করা দরকার। এটা সিগারেটের মতোই ক্ষতিকর বলে আমাদেরকে একদল গবেষক প্রাক-বাজেট আলোচনায় জানিয়ে গেছেন। একইসঙ্গে সেই যুক্তিতে তারা কার্বোনেটেড বেভারেজ, সুইটেন্ড বেভারেজের ওপর উচ্চ হারে করারোপেরও দাবি জানিয়েছে।
গত ৫ মার্চ ২০২৪ বিকেলে আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে প্রাকবাজেট আলোচনায় কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা কার্বোনেটেড বেভারেজ ও সুইটেন্ড বেভারেজের উপর কর হার কমানোর দাবি জানালে এনবিআর চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত প্রাকবাজেট আলোচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরো (বিইআর) জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সুইট, কার্বোনেটেড বেভারেজ ও সুইটেন্ড বেভারেজ পণ্যের উপর উচ্চ হারে করারোপের প্রস্তাব দেয়। গত অক্টোবরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং সিএলপিএর একটি প্রতিনিধিদল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের সাথে স্বাক্ষাৎ করে চিনির পরিমান অনুসারে সুইট সুগার বেভারেজে কর বৃদ্ধি এবং এ ধরনের ক্ষতিকর পণ্যের উপর ১% স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ আরোপের সুপারিশ করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক আইনজীবী সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, অতিরিক্ত পানীয়ের উপর কর বৃ্দ্ধি এনবিআরের সঠিক পরিকল্পনা। যেভাবে সুগার, বেভারেজের ব্যবহার বাড়ছে তাতে করে অসংক্রামক রোগও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে কর বৃদ্ধি করে মানুষকে নিরুৎসাহিত করার কোনো বিকল্প নেই।
অন্যদিকে জনস্বাস্থ্য অর্থনীতি ড. রুমানা হক বলেন, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় অসংক্রমক রোগ কমাতে সুইট সুগার বেভারেজের উপর কর বৃদ্ধি জরুরি।
গত ৫ মার্চ জনস্বাস্থ্যের জন্য সুইটেন্ড বেভারেজ কম ক্ষতিকর নয় এ বিষয়ে দেয়া এনবিআর চেয়ারম্যানের বক্তব্য পাবলিক হেলথ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।
কার্বোনেটেড বেভারেজ ও সুইটেন্ড বেভারেজ কোম্পানির প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আপনারা দাবি করছেন বেভারেজের মার্কেট দারুণভাবে ফল করছে, আপনারা মরে যাচ্ছেন। কিন্তু আপনারা রেস্টুরেন্টে গিয়ে দেখে আসেন, কতজন বসে পানি খায় আর কয়জন কোল্ডড্রিংকস খায়। রেস্টুরেন্টে গেলেই দেখি সবাই কোল্ডড্রিংকস খাচ্ছে। আপনাদের কথার সঙ্গে মেলে না। আপনারা আরও বলছেন এ বাজার সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। অথচ আবার আপনারাই বলছেন এসগুলো নাকি রপ্তানিও করেন!
তিনি আরও বলেন, আপনারা বেভারেজের পক্ষে বিভিন্ন যুক্তি দেখালেন। আরেকদল (জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা) আমাদের সাথে বসে রীতিমত ঝগড়া করে গেছে। সিগারেটের মতোই মারাত্বক ক্ষতিকর হলো হাইলি সুগার কনসেন্ট্রেটেড জুস, আদার বেভারেজ প্রডাক্ট, বিশেষ করে কার্বোনেটেড বেভারেজ। এর মধ্যে ভালো কোনো কিছু নেই। এরকম বলে তারা আমাদের কাছে যুক্তি তর্ক উপস্থাপন করেছে। কার্বোনেটেড বেভারেজ, সুইটেন্ড বেভারেজকে নিরুৎসাহিত করা দরকার। এটা সিগারেটের মতোই ক্ষতিকর।
আপনারা আপনাদের পয়েন্ট অব ভিউ থেকে দেখছেন। কিন্তু অন্যদলও আমাদের উপর চড়াও হচ্ছে কেনো এসব জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পণ্য থেকে কম ডিউটি নেয়া হবে।
এসময় প্রাক-বাজেট আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যান সমাপনী বক্তব্যে বলেন, যাইহোক আমরা সবকিছুই ব্যালেন্স করার চেষ্টা করি। এর মধ্য দিয়েই আপনাদের কম্পিটিশন করে টিকে থাকতে হবে।