বাংলাদেশের তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং-কে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘তামাক নিয়ন্ত্রণে জাতীয় সম্মাননা ২০২৩’ প্রদান করা হয়েছে।
রবিবার (১১ জুন, ২০২৩) সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উদযাপন জাতীয় অনুষ্ঠানের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব জাহিদ মালেক এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরামের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ মোঃ হাবিবে মিল্লাত এমপি’র হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জনাব জাহিদ মালেক বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু অসংক্রামক রোগ, যেমন ক্যান্সার, হৃদরোগ, কিডনি রোগ ডায়াবেটিস, এবং শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগ আমাদের শরীরে বাসা বাঁধছে। বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং তামাক নিয়ন্ত্রণে অবদান রেখে জাতীয় সম্মাননা অর্জন করায় আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।” তিনি আরও বলেন, “তামাক নিয়ন্ত্রণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনীটি খুব শিগগির সংসদে উপস্থাপন করা হবে।”
অধ্যাপক ডাঃ মোঃ হাবিবে মিল্লাত এমপি বলেন, “ যে কোনো পুরস্কার উৎসাহ যোগায়। আমি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ধন্যবাদ জানাই মাননীয় সংসদ সদস্য যারা বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরামের হয়ে দীর্ঘদিন ধরে তামাক নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি যিনি ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে আমাদের পথ দেখিয়েছেন। সেই সাথে ধন্যবাদ জানাই মাননীয় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে যিনি আমাদের এই তামাক বিরোধী আন্দোলনে আন্তরিক সহায়তা প্রদান করছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দেশের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে, সেই লক্ষ্যে তামাকের পরিবর্তে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে।”
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন এবং এই ঘোষণার ফলে আমাদের তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জন আরো সহজ হবে। আমরা শীঘ্রই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী সংসদে পাসের জন্য নিয়ে যাব। বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরামের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ মোঃ হাবিবে মিল্লাত এমপি একজন কার্ডিয়াক সার্জন এবং তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ পার্লামেন্টের ফোরাম তামাক নিয়ন্ত্রণে অসামান্য অবদান রেখে যাচ্ছে। আমি বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং-কে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।”
পদক গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বেগম শিরীন আহমেদ এমপি। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং-এর সাচিবিক দায়িত্ব পালনকারী সংস্থা স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডাঃ নিজাম উদ্দীন আহম্মেদ এবং পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম। এছাড়াও সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সমর্থ হয়েছে। বিশেষ করে, ধূমপান ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন এর সংশোধন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, তামাকপণ্যের কর ও মূল্য বৃদ্ধি এবং তরুণদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে তামাকের ব্যবহার কিছুটা হলেও কমে এসেছে, এবং বাংলাদেশের জাতীয় টিকাদান কর্মসূচিতে গ্যাভি (Gavi, the Vaccine Alliance)-এর অর্থায়ন ২০৩০ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।