হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে দুই বছর গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্ব পাচ্ছে বাংলাদেশ বিমান। বর্তমানে নানা অনিয়মের অভিযোগ থাকলেও সক্ষমতার জানান দিতে চায় বিমান। আর সেবার মান নিশ্চিতে ব্যর্থ হলে জরিমানার পরামর্শ এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের।
২০১৯ সালের শেষে শুরু হয় শাহজালাল বিমানবন্দরের নান্দনিক তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণযজ্ঞ। বিশ্বমানের এ টার্মিনাল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ২১ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকা। এরমধ্যে ১৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ সহায়তা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি বা জাইকার।
চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষের দিকে অত্যাধুনিক এ টার্মিনালের। এখন অপেক্ষা যাত্রী সেবার। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, টার্মিনালের মূল দায়িত্বে থাকবে, জাইকার স্পেশাল পারপাস কোম্পানি বা পিএসসি গ্রুপ। আর গ্রুপটির সঙ্গে প্রাথমিকভাবে দুই বছরের জন্য যাত্রী ও কার্গো সেবায় চুক্তিবদ্ধ হবে বাংলাদেশ বিমান।
বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, স্পেশাল পারপাস কোম্পানি বা জাইকার পিএসসি গ্রুপ থার্ড টার্মিনালের মেইনটেন্যান্স কাজ করবে। বিশ্বের সেরা স্ট্যান্ডার্ড মেনে কাজ করা হবে। আন্তর্জাতিক মানের সেবা দিতে ব্যর্থ হলে পিএসসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাবে।
তৃতীয় টার্মিনাল নিজেদের সক্ষমতার জানান দিতে ইতোমধ্যে এক হাজার কোটি টাকার অত্যাধুনিক পরিবহন ও মেশিনারিজ কেনা, জনবল নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ নিয়েছে বিমান। বিশ্বমানের সেবা দিতে বদ্ধপরিকর প্রতিষ্ঠানটি।
বাংলাদেশ বিমানের মহাব্যবস্থাপক বোসরা ইসলাম বলেন, এয়ারলাইন্সের ব্যবসায় অবশ্যই আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলতে হয়। বাংলাদেশ বিমানও করছে। থার্ড টার্মিনাল চালু হলে এই স্ট্যান্ডার্ড আরও বেশি করে মেনে চলা হবে।
এদিকে, গত ৬ মাস ধরে বিমানবন্দরে যাত্রীরা স্বল্প সময়ে লাগেজ হাতে পেলেও লাগেজ ভাঙ্গা বা কাটার অভিযোগ এখনো পিছু ছাড়েনি বিমানের। যাত্রীরা বলছেন, বিমানবন্দরে যাত্রীসেবা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ উন্নত হয়েছে। তবে এখনও কারও কারও লাগেজ ভাঙা বা কাটা মিলছে।
এমন প্রেক্ষাপটে এভিয়েন বিশেষজ্ঞ নাফিজ ইমতিয়াজ উদ্দিন বলেন, অবশ্যই আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলতে হবে। শর্ত পূরণে ও সেবা দিতে বিমান ব্যর্থ হলে বিকল্প নেই জরিমানার।
উল্লেখ্য, তৃতীয় টার্মিনালের ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটারসহ বর্তমানের দুটি টার্মিনালে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ বর্গমিটারে যাত্রী ও কার্গো সেবা দিতে হবে বাংলাদেশ বিমানকে। বর্তমানে বছরে ৮০ লাখ যাত্রী সংখ্যা, দুই কোটি ছাড়িয়ে যাবে।