এবার কর ফাঁকির প্রমাণ মেলায় ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানীকে ১০ কোটি ৭০ লাখ ইউরো বা ১ হাজার ৩’শ কোটি টাকা জরিমানা করেছে নেদারল্যান্ডসের একটি আদালত। একইসাথে কৃত্রিমভাবে খরচ বাড়িয়ে গ্রুপ কোম্পানির কাছে পাঠানো ১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ইউরো মুনাফার ওপরও ট্যাক্স দিতে হবে বহুজাতিক সিগারেট কোম্পানি বিএটিকে। বিএটির আলোচিত ব্র্যান্ড লাকি স্ট্রাইক ও ডানহিল সিগারেট উৎপাদন ও বিপনণের মুনাফা থেকে বিশাল অংকের টাকা পাঠিয়েছিলো কোম্পানিটি।
গত শুক্রবার ডাচ আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, ২০১৩ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত সময়কালে ৪ বিলিয়ন ইউরো ব্যবসা করে বিএটি। বিএটি নেদারল্যান্ডস যে পরিমান মুনাফার কথা জানিয়েছিল দেশটির কর অফিসকে, প্রকৃত মুনাফা তার চেয়ে প্রায় ১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ইউরো বেশি ছিল। নেদারল্যান্ডসের কর ফাঁকি দিতে গ্রুপ কোম্পানির ফি বাবদ ২০১৬ সালে তাদের মুনাফা থেকে ১ দশমিক ৮বিলিয়ন ইউরো যুক্তরাজ্যের গ্রুপ কোম্পানিতে স্থানান্তর করেছিলো ডাচ বিএটি। তাই জরিমানা ছাড়াও, কৃত্রিমভাবে খরচ দেখিয়ে যুক্তরাজ্যের গ্রুপ কোম্পানির কাছে পাঠানো বিশাল অংকের মুনাফার উপরও কর দিতে হবে বিএটিকে।
নেদারল্যান্ডসের মতো বাংলাদেশ থেকেও প্রতিবছর কারিগরি ও পরামর্শক ফিসহ নানান খরচ বাবদ কোটি কোটি টাকা গ্রুপ কোম্পানিতে পাঠায় বিএটি বাংলাদেশ। তবে এজন্য তাদেরকে কোনো জরিমানার নজির নেই। বিষয়টিকে সন্দেহজনক বলে দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে বাংলাদেশে কর্মরত তামাক নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে রয়টার্স, ডাচ নিউজসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূলত বিএটির গ্রুপ কোম্পানির মাধ্যমে ডাচ সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানে ঋণ পরিশোধের বাড়তি খরচ নিয়ে প্রশ্ন তোলে ডাচ কর অফিস। তাদের অভিযোগ, কর কম দিতেই কৃত্রিমভাবে খরচ বাড়িয়ে যুক্তরাজ্যে ১ দশমিক ৮বিলিয়ন ইউরো পাঠিয়েছিল ডাচ বিএটি।
দীর্ঘ আইনী লড়াই শেষে, কর যোগ্য হওয়ায় আদালত ১০ কোটি ৭০ লাখ ইউরো বা বাংলাদেশি টাকায় ১ হাজার ৩’শ কোটি টাকা জরিমানা গুণতে হবে বিএটিকে।
এর আগে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে বহুজাতিক সিগারেট কোম্পানি বিএটিকে ৬৩৫ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা জরিমানা করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অভিযোগ, ২০১৩ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত বিএটি তাদের সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে উত্তর কোরিয়ায় সিগারেট বিক্রি করেছিল।