পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু – মধ্যম ও নিম্ন আয়ের দেশগুলোয় একটি বড় সমস্যা। পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার প্রধান কারণ হলো সাঁতার না শেখা। সাধারণত ১২ থেকে ১৫ মাস বয়সের মধ্যে শিশুরা হাঁটতে শেখে এবং নতুন এই অভিজ্ঞতার পুরোটাই তারা উপভোগ করতে চায়। ফলে এই শিশুদের পরিবারের সদস্যরা ব্যস্ত থাকলে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বেড়ে যায়।
কোনো শিশু পানিতে পড়ে গেলে তার শ্বাসনালি দিয়ে পানি ফুসফুসে ঢুকে যায়। ফলে শ্বাসপ্রশ্বাস বাধাগ্রস্ত হয়ে শরীরে অক্সিজেন কমে যায় এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড জমে যায়। দ্রুত উদ্ধার না করলে শ্বাস বন্ধ হয়ে শিশুটি মারা যায়।
করণীয়
১. দ্রুত উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হবে এবং নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিতে হবে।
২. গায়ের ভেজা জামা বা গেঞ্জি সরিয়ে দিতে হবে।
৩. দীর্ঘদিন ধরে চলমান কিছু সংস্কার যেমন শিশুকে পানি থেকে তুলে মাথায় নিয়ে ঘোরানো, পেটে চাপ দিয়ে পানি বের করা, ছাই বা লবণ দিয়ে শিশুর শরীর ঢেকে দেওয়া বা তাকে বমি করানোর চেষ্টা করানো এসব করে সময় নষ্ট করা যাবে না। যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ হাসপাতাল/চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে।
প্রতিরোধ
১. সবসময় খেয়াল রাখতে হবে শিশু যেন একা একা কোনো জলাধারের কাছে না যায়।
২. বাড়ির পাশের অপ্রয়োজনীয় ডোবা বা গর্তগুলো ভরাট করতে হবে, যাতে সেখানে পানি জমতে না পারে।
৩. বাড়ির পুকুরের চারপাশে বেড়া দিতে হবে।
৪. বাড়িতে পানি ভর্তি পাত্র বা বালতি সব সময় ঢেকে রাখতে হবে।
৫. শিশুর বয়স ৫ বছর হলে তাকে সাঁতার শেখানো উচিত। এতে ঝুঁকি কমবে।
৬. শিশুকে একা পানিতে নামতে দেওয়া যাবে না।
নোট: শিশু বিশেষজ্ঞ অধ্যপক ডা: মো: আবিদ হোসেন মোল্লার লিখিত ‘শিশু স্বাস্থ্যের খুঁটিনাটি’ বই থেকে নেওয়া হয়েছে তাঁর অনুমতিক্রমে।