ঢাকামঙ্গলবার , ৩০ এপ্রিল ২০২৪

প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ধূমপায়ীদেরকে ভর্তি না করায় গুরুত্ব দেবে বিএমইটি

নিজস্ব প্রতিবেদক
এপ্রিল ৩০, ২০২৪ ৩:৫৬ অপরাহ্ণ । ১৮৮ জন

প্রতি বছর কয়েক হাজার গাড়ি চালকদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গাড়ি চালনা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হলেও তাদের নেই সড়ক পরিবহন আইন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সম্পর্কিত স্পষ্ট কোনো ধারণা। তাই তাদের এই আইন সম্পর্কিত পরিস্কার ধারণা থাকা আবশ্যক বলে মনে করেন বক্তারা। গতকাল সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ সকাল ১১.০০ টায় বাংলাদেশ জার্মান কারিগরী প্রশিক্ষণ সেন্টার (বিজিটিটিসি)’র সম্মেলন কক্ষে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে ড্রাইভারদের প্রশিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে যৌথভাবে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ডেভলপমেন্ট এ্যাকটিভিটিস অফ সোসাইটি-ডাস্ ও বাংলাদেশ জার্মান কারিগরী প্রশিক্ষণ সেন্টার (বিজিটিটিসি)।

ডাস্ এর সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মোয়াজ্জেম হোসেন টিপুর সঞ্চালনায় এবং বাংলাদেশ জার্মান কারিগরী প্রশিক্ষণ সেন্টারের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফৌজিয়া শাহনাজ এর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক সালেহ আহমদ মোজাফফর, মহাপরিচালক (গ্রেড-১)। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী মো: আখতারউজ-জামান, যুগ্মসচিব, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)’র রোড সেফটি বিভাগের পরিচালক শেখ মো. মাহবুব-ই রব্বানী। সভায় মূল বক্তব্য প্রদান করেন ডাস্’র টীমলীড আমিনুল ইসলাম বকুল। এছাড়া সভায় ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন ডাস্’র পলিসি এনালিস্ট আসরার হাবীব নিপু।

প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, গাড়িচালক যদি নিজেই ধূমপান করে তাহলে অন্যদের কিভাবে তারা নিয়ন্ত্রণ করবে। প্রত্যক্ষ থেকে পরোক্ষ ধূমপান বেশী হচ্ছে। তিনি গল্পের মাধ্যমে উল্লেখ করেন যে, দেশের ৯৫% শিশুরা পরোক্ষ ধূমপানের ফলে বিভিন্ন রোগ-ব্যধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। শুধু তামাকই নয়, ই-সিগারেটও অনেক ক্ষতি করছে। তিনি আশ্বাস প্রদানের সাথে বলেন, আগামীতে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহের সকল কোর্সেই ভর্তির সময় ধূমপায়ীদেরকে ভর্তি না করে এনফোর্সমেন্ট এর বিষয়টা গুরুত্ব দেবে বিএমইটি। এছাড়া তামাকমুক্ত করনের ক্ষেত্রে যে সকল প্রতিষ্ঠানগুলি ভালো কাজ করেছে তাদেরকে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে স্বীকৃতি সরূপ এওয়ার্ড প্রদান করার কথাও তিনি উল্লেখ করেন। সর্বোপরি তিনি তাঁর বক্তব্যে গাড়ি চালকের পাশাপাশি চালকদের প্রশিক্ষকদেরকে আরও বেশী তামাকমুক্ত আইন ও তার কূফল সম্পর্কে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিআরটিএ’র মাহবুব-ই রব্বানী বলেন, সমাজের অবহেলিত পথ শিশুরা ১০০% নেশা করে। এই শিশুরাই প্রথম গাড়ির কাজে নিযুক্ত হয়। পরবর্তীতে ওস্তাদের হাত ধরে গাড়ির চাকা ঘুড়ায়, সেই ড্রাইভারদের কাছ থেকে ধূমপান নিয়ন্ত্রণের বিষয়টা অতটা সাড়া পাওয়া যায়না। এইখানে ড্রাইভারদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা দরকার। একই সাথে ধূমপান নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, সেক্ষেত্রে সড়ক দূর্ঘটনাও নিয়ন্ত্রণে আসবে। আমরা বর্তমানে ড্রাইভিং লাইসেন্স এর আগে ডোপ টেস্ট এর পদক্ষেপ গ্রহণ করছি, ভবিষ্যতে তামাক সেবনের বিষয়টিও বিবেচনায় নিয়ে আসবো। ডোপ টেস্ট এর মত ধূমপানের বিষয়টাকেও প্রশিক্ষণ কারিকুলামে অন্তর্ভূক্ত করার ব্যাপারে তাঁর দপ্তর সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন বলে তিনি আশ্বাস প্রদান করেন।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এইড ফাউণ্ডেশনের আবু নাসের অনিক, বিইআর এর হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, টিসিআরসি’র বিভূতি ভূষণ, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের মো: আজিমউদ্দিন, শেয়ারবীজ পত্রিকার সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার মাসুম বিল্লাহ সহ অন্যান্য তামাক বিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধিগণ ও বিভিন্ন কারিগরী প্রশিক্ষণ সেন্টারের প্রশিক্ষকবৃন্দ।