সিঙ্গাপুরকে বাংলাদেশের বন্দর অবকাঠামোর উন্নয়ন ও জাহাজ শিল্পে বিনিয়োগের উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের মেগা সম্প্রসারণ প্রকল্প বে টার্মিনাল নির্মাণে বাংলাদেশকে ৬৫ মিলিয়ন অর্থাৎ ৬৫ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এই টার্মিনালটি নির্মিত হলে বাংলাদেশের বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রতিযোগিতা-সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) বাংলাদেশে সিঙ্গাপুরের অনাবাসিক হাইকমিশনার ডেরেক লোহ ইউ-সে নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টার সাথে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎকালে এ আহ্বান জানান।
এ সময় উপদেষ্টা নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের বিষয়ে হাইকমিশনারকে ব্রিফ করেন এবং বন্দর অবকাঠামো নির্মাণ ও ব্যবস্থাপনা অভিজ্ঞতা বিনিময় ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতায় সিঙ্গাপুরের সহায়তা কামনা করে বলেন, বন্দর অবকাঠামো নির্মাণ ও ব্যবস্থাপনায় সিঙ্গাপুরের চমৎকার অভিজ্ঞতা রয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন বন্দর যথা বে টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরে শিপইয়ার্ড নির্মাণ, মোংলা বন্দরকে আধুনিকীকরণসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বন্দরসমূহের অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে সিঙ্গাপুরকে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের জাহাজ শিল্পখাতে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে। সকল প্রক্রিয়া এখন স্বচ্ছতা ও উন্মুক্ত পদ্ধতিতে পরিচালিত হচ্ছে। দেশের সম্ভাবনাময় জাহাজ শিল্পখাতে সিঙ্গাপুর বিনিয়োগ করতে পারে।
উপদেষ্টা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের মেগা সম্প্রসারণ প্রকল্প বে টার্মিনাল নির্মাণে বাংলাদেশকে ৬৫ মিলিয়ন অর্থাৎ ৬৫ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এই টার্মিনালটি নির্মিত হলে বাংলাদেশের বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রতিযোগিতা-সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে।
বন্দরের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির ফলে অনেকাংশে কমে আসবে আমদানি ও রপ্তানি ব্যয়। এই প্রকল্পের আওতায় দুটি কনটেইনার টার্মিনাল, একটি মাল্টিপারপাস টার্মিনাল এবং একটি তেল ও গ্যাস টার্মিনাল উন্নয়নের পরিকল্পনা আছে সরকারের। এটিকে গ্রীণপোর্ট হিসেবে গড়ে তোলা হবে। বে টার্মিনাল বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর অবকাঠামোর আধুনিকীকরণ এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে যোগাযোগ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা আরও বলেন, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরে একটি আন্তর্জাতিকমানের শিপইয়ার্ড/ডকইয়ার্ড নির্মাণের পরিকল্পনার রয়েছে সরকারের। এছাড়া, মোংলা পোর্টকে আধুনিকীকরণ করতে প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। চীন দুটি কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণের সহায়তা করছে। ভারতের এক্সিম ব্যাংকের সহায়তায় আরেকটি প্রকল্প দ্রুতই আলোর মুখ দেখবে।
উভয়ই মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আলোচনার সূচনা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং আশা করেন যে এফটিএ দুই দেশের মধ্যে অধিকতর অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা সহজতর করবে। বৈঠকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।