ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে দেশের ১১ জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। সংকটে ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং চট্টগ্রাম, সিলেট বিভাগের দুর্গত এলাকার লাখ লাখ মানুষ। এইপরিস্থিতে মৌসুমী বন্যা এবং বৃষ্টিপাতের জরুরী তথ্য জানাচ্ছে আবহাওয়া সংস্থাসমূহ। আজ (২৪ আগস্ট) শনিবার সকাল ৯ টা থেকে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীসমূহের পানি ধীর গতিতে হ্রাস পাচ্ছে।
আজ বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত স্টেশন: ৯টি
অমরশীদে কুশিয়ারা ১৪ সেন্টিমিটার, শেওলায় কুশিয়ারা ১ সেন্টিমিটার, শেরপুর থেকে সিলেটে কুশিয়ারা ৯ সেন্টিমিটার, মারকুলীতে কুশিয়ারা ৪ সেন্টিমিটার, মৌলভীবাজারে মনু ৯১ সেন্টিমিটার, বাল্লায় খোয়াই ৪৪ সেন্টিমিটার এবং কুমিল্লার গোমতী নদী ৯৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে ফেনীর ২টি সেশনের তথ্য পাওয়া যায়নি।
বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে
বিলোনিয়া থেকে ত্রিপুরায় মুহুরী নদী বিপৎসীমার ১০১ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে। বিগত ২৪ ঘণ্টায় ১৮৩ সেন্টিমিটার পানি হ্রাস সাবরুম অঞ্চলের ফেণী নদীর। ৩ ঘণ্টায় ১৬ সেন্টিমিটার হারে হ্রাস পাচ্ছে অমরপুরের গোমতী নদী। বিপৎসীমার ২৪ সেন্টিমিটার ওপর আছে, তবে বিগত ২৪ ঘণ্টায় ৫১ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের উজানে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত
গত ২৪ ঘণ্টায় ত্রিপুরার সিপাহীজালা ২১ মিলিমিটার, টেলিমুরায় ৭ মিলিমিটার, কুমারঘাটে ৫ মিলিমিটার, গন্ধাছড়ায় ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের অভ্যন্তরে উল্লেখযোগ্য হারে নোয়াখালীতে ৮৪ মিলিমিটার এবং টেকনাফে ৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতির গতকাল হতে উন্নতি
বিগত ২৪ ঘণ্টায় পূর্বাঞ্চলীয় কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী জেলার ভারতীয় ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এবং ত্রিপুরা প্রদেশের অভ্যন্তরীণ অববাহিকাসমূহে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত পরিলক্ষিত হয়নি এবং উজানের নদ-নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে। ফলে বর্তমানে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চলের বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতির গতকাল হতে উন্নতি হচ্ছে এবং অব্যাহত আছে।
আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘন্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই, ধলাই নদী সমূহের সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘন্টায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। এ সময় এ অঞ্চলের ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলার মুহুরী, ফেনী, গোমতী, হালদা ইত্যাদি নদীসমূহের সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে, গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে, উত্তরাঞ্চলের তিস্তা-ধরলা-দুধকুমার নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজমান আছে, যা আগামী ৪৮ ঘন্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এবং এতে, সেনাবাহিনী, কোষ্টগার্ড, বিজিবি, জেলা প্রশাসন, স্থানীয় শিক্ষার্থীবৃন্দ ও বাপাউবো দুর্যোগ মোকাবিলায় কাজ করছে।