দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যার্তদের সহায়তা করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচিতে মানুষের ঢল নেমেছে। শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগে অংশীদার হতে নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী নগদ অর্থ কিংবা ত্রাণসহায়তা পৌঁছে দিতে আসছেন বিপুলসংখ্যক মানুষ। শনিবার (২৪ আগস্ট) সরেজমিনে দেখা যায়, টিএসসিতে চারদিকে লোকে-লোকারণ্য। কোনো জনসভা, প্রতিবাদ সমাবেশ কিংবা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নয়, তারা আসছেন বন্যাদুর্গতদের সাহায্যের জন্য।
কিছুক্ষণ পরপরই ব্যক্তিগত গাড়ি আর ট্র্যাক এসে দাঁড়ালে সঙ্গে সঙ্গেই ত্রাণসামগ্রী নামানোর কাজে লেগে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। শুধু গাড়ি নয়, কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ রিকশা নিয়ে করে যে যার সামর্থ অনুযায়ী সহায়তা নিয়ে ছুটে আসছেন টিএসসিতে। কেউ কাপড়, কেউ শুকনা খাবার, ওষুধ কেউ আবার আসছেন নগদ অর্থ নিয়ে।
শিক্ষার্থীরা লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থেকে ত্রাণ সামগ্রি সংগ্রহ করছেন। পরে সেগুলো নিয়ে জড়ো করে প্যাকেট করা হচ্ছে। এরপর সহায়তা পৌঁছে দিতে বন্যাকবলিত এলাকায় যাচ্ছে ত্রাণবাহী ট্রাক।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের হিসাব অনুযায়ী, শুক্রবার (২৩ আগস্ট) রাত পর্যন্ত ১ কোটি ৪২ লাখ টাকা অনুদান সংগ্রহ করেছেন তারা। শিক্ষার্থীরা বলছেন, পর্যাপ্ত পোশাক আছে। এখন প্রয়োজন ওষুধ, রিচার্জেবল লাইট, পাওয়ার-ব্যাংক, মোমবাতি।
ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় ১১ জেলায় এখন পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। মারা যাওয়া ১৮ জনের মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামের ৫ জন, কুমিল্লার ৪ জন, নোয়াখালীতে ৩ জন, কক্সবাজারে ৩ জন এবং ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও লক্ষীপুর জেলায় একজন করে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় শনিবার এসব তথ্য জানিয়েছে।
এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যা ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ১৬৯ জন। বর্তমানে আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছেন ২ লাখ ৮৪ হাজার ৮৮৮ জন মানুষ। ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা দেয়ার জন্য ৭৭০টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।