কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও তার স্ত্রী সোফি ১৮ বছরের বৈবাহিক সর্ম্পকে টানাপোড়নের পর আলাদা থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। এখন সারাবিশ্ব এই নিয়ে করছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। এরই মধ্যে গত ৩১ জুলাই ওয়ার্ল্ড অব স্ট্যাটিসটিক্স বিবাহ-বিচ্ছেদের তালিকা প্রকাশ করেছে।
তালিকায় দেখা যাচ্ছে সবচেয়ে কম বিবাহ-বিচ্ছেদ হয় ভারতে। দেশটিতে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে মাত্র এক জনের বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়। এই তালিকার প্রথমদিকেই রয়েছে আরো কিছু উন্নয়নশীল দেশের নাম যেমন, ভিয়েতনাম ৭ শতাংশ, তাজিকিস্তান ১০ শতাংশ, ইরান ১৪ শতাংশ, মেক্সিকো ১৭ শতাংশ, এবং মিশর ১৭ শতাংশ।
বিবাহ বিচ্ছেদে শীর্ষে থাকা দেশটি হলো পতুর্গাল। লাতিন আমেরিকার এই দেশটির প্রতি ১০০ জনের মধ্যে বিবাহ-বিচ্ছেদ হয় ৯৪ জন মানুষের। বিবাহ-বিচ্ছেদের এই হারে উপরের দিকে আছে স্পেন ৮৫ শতাংশ, রাশিয়া ৭৩ শতাংশ, ফিনল্যান্ড ৫৫ শতাংশ, ফ্রান্স ৫১ শতাংশ , সুইডেন ৫০ শতাংশ , কানাডা ৪৭ শতাংশ ডেনমার্ক ৪৬ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্র ৪৫ শতাংশ , চীন ৪৪ শতাংশ এবং অস্ট্রেলিয়া ৪৩ শতাংশ এবং নিউজিল্যান্ড ৪১ শতাংশ।
পরিসংখ্যান আনুযায়ী যে দেশ যত উন্নত সে দেশে বিবাহ-বিচ্ছেদের হার তত বেশি। যেমন অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ইত্যাদি। এই দেশেগুলোর মধ্যে থেকেই সুখ ও শান্তি সূচকে প্রতি বছর প্রথম হয়। অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তার নিশ্চিত করার পরও কেনো এই দেশগুলোতে বিবাহ-বিচ্ছেদের হার এতো বেশি?
পশ্চিমা দেশগুলো এ নিয়ে বিস্তার গবেষণাও করেছে। গবেষকদের মতে, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বিশ্বায়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সম্পর্কে ভাঙন ও বিবাহবিচ্ছেদ বাড়বেই। শুধু ধর্ম, নীতিকথা, আইন কিংবা পুরুষতান্ত্রিকতা দিয়ে এই জোয়ার ঠেকিয়ে রাখা অসম্ভব। প্রসঙ্গত, ভারতে বিবাহবিচ্ছেদের হার কম হওয়ার পিছনে সমাজবিজ্ঞানীদের মত, পরিবার ব্যবস্থা টিকে থাকার কারণে এখানে বিবাহ ভাঙার প্রবণতা কম। তাছাড়া ভারতে এখনও পর্যন্ত নারী শিক্ষার হার কম, চাকরির হারও কম। কম নারীস্বাধীনতা। এখনও অনেক ক্ষেত্রেই স্বামীর আয়ের উপরই নির্ভরশীল ভারতের বেশিরভাগ নারী। এছাড়াও ধর্মীয় কিছু প্রতিবন্ধকতাও রয়েছে। উন্নত দেশগুলো এক্ষেত্রে একেবারেই উল্টো।