ঢাকামঙ্গলবার , ২১ নভেম্বর ২০২৩
  • অন্যান্য

বীমা খাতে উন্নয়ন ও সুশাসন নিশ্চিতকরণে ‘কর্পোরেট গভর্নেন্স গাইডলাইন’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নভেম্বর ২১, ২০২৩ ৩:২২ অপরাহ্ণ । ১৪২ জন

বাংলাদেশের বীমা খাতে উন্নয়ন ও সুশাসন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ আয়োজিত এবং বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (বিআইএসডিপি) সহযোগিতায় গতকাল ২০ নভেম্বর ২০২৩, সোমবার সিরডাপ মিলনায়তনে “কর্পোরেট গভর্নেন্স গাইডলাইন” অবহিতকরণ বিষয়ে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সম্মানিত সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন) জনাব মোঃ দলিল উদ্দিন।

বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরাম, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমি ও বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের প্রতিনিধিগণ; বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সকল সদস্য ও কর্মকর্তাগণ, সকল বীমা কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এবং জীবন বীমা কর্পোরেশন ও সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব মোহাম্মদ জয়নুল বারী।

দুই পর্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারের প্রথম পর্বের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সম্মানিত সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ। তিনি বলেন,  বীমা সেক্টরের বিধি নিষেধ সঠিকভাবে পালিত না হওয়ার চলমান সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে এসে সকলের সম্মিলিত চেষ্টায় কর্পোরেট গভর্নেন্স বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।বিপুল সমভাবনা  থাকা সত্ত্বেও  আমাদের বীমা সেক্টর পিছিয়ে আছে বলে তিনি  উল্লেখ করেন।

২০৪১ সালে  উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে বীমা সেক্টরের করণীয় কর্মের পরিধি বেশ বিস্তৃত, যা মূলত; বীমা প্রতিষ্ঠানের সঠিক পরিচালনা পদ্ধতি দ্বারা অর্জন  সম্ভব বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সর্বোপরি, তিনি একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ পরিচালনা পর্ষদ দ্বারা ‘কর্পোরেট গভর্নেন্স নিশ্চিত করে  আস্থাশীল বীমা সেক্টর  তৈরির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার  আশাবাদ ব্যক্ত করেন ।

অনুষ্ঠানের সভাপতি এবং বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জনাব মোহাম্মদ জয়নুল বারী বলেন যে, বীমা আইন ২০১০ প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়নের জন্য বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ গঠনের মাধ্যমে বীমা খাতে সংস্কার ও আধুনিকায়ন শুরু হয়। এ  কর্তৃপক্ষের মূল উদ্দেশ্য  হচ্ছে বীমা খাতের পদ্ধতিগত উন্নয়ন ও গ্রাহক স্বার্থ রক্ষা করা। তাঁর মতে বাংলাদেশের বীমা খাতের সবচেয়ে বড সমস্যা হলো বীমা কোম্পানিসমূহে  কর্পোরেট গভর্নেন্সের অভাব। এর অবশ্যম্ভাবী ফল হিসেবে অনেক কোম্পানি আর্থিক সংকটে পড়ে বীমা দাবী পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে। কর্পোরেট গভর্নেন্স হলো একটি  কোম্পানির সকল কৌশল, পদ্ধতি বা সম্পর্ক যা দ্বারা কোম্পানি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। কর্পোরেট গভর্নেন্স প্রবর্তনের  মাধ্যমে সকল কোম্পানির জন্য একটি প্রমিত পরিচালনা পদ্ধতি রূপরেখা প্রস্তুত করা হয়েছে।  কর্তৃপক্ষের একার পক্ষে এ গাইডলাইন বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়, সকলের সদিচ্ছা ও ইতিবাচক মানসিকতা দ্বারাই  কর্পোরেট গভর্নেন্স   বাস্তবায়ন সম্ভব বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

সেমিনারের দ্বিতীয় পর্বে কর্পোরেট গভর্নেস গাইডলাইন উপস্থাপন করেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক (নন-লাইফ) জনাব মোহাম্মদ খালেদ হোসেন।

উপস্থাপিত গাইডলাইনের বিষয়ে নির্ধারিত আলোচকবৃন্দ- বাংলাদেশ ইনসিওরেন্স একাডেমির পরিচালক জনাব এস.এম. ইব্রাহিম হোসাইন, ACII,  একচ্যুয়ারি ড. মোহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন এবং বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক (লাইফ) ড. মো: আশরাফুজ্জামান,  আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। অত:পর কর্পোরেট গাইডলাইনের বিষয়ে উন্মুক্ত আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। উন্মুক্ত আলোচনা শেষে সেমিনারের সভাপতি এবং বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব মোহাম্মদ জয়নুল বারী সার্বিক আলোচনার প্রেক্ষিতে সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ সর্বদা  বীমা প্রতিষ্ঠানের যে কোন বিষয়ে সহযোগীতার জন্য উন্মুক্ত এবং সেমিনারে আলোচিত বিভিন্ন পরামর্শ, মতামত, প্রস্তাবনাসমূহ  বিবেচনা করা হবে। তিনি সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।