ঢাকাসোমবার , ১৪ অক্টোবর ২০২৪
  • অন্যান্য

আজকের সর্বশেষ সবখবর

ভুল চিকিৎসায় শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
অক্টোবর ১৪, ২০২৪ ১২:৫৮ অপরাহ্ণ । ১৫ জন

সিলেটে ভুল চিকিৎসায় শিশুর মৃত্যুর অভিযোগে পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। এ ঘটনায় রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশুটির চিকিৎসায় সম্পৃক্তদের শাস্তির দাবি করা হয়েছে। রবিবার সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন ছাতকের হাজিপাড়া নোয়াগাঁও গণেশপুর গ্রামের শিশু হামদান মিরানের বাবা আমিনুর রহমান মুবিন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তাঁর ২২ মাস বয়সী শিশু সন্তান হামদান মিরান ৬ অক্টোবর থেকে আমাশয় রোগে ভুগছিল। তার শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্বাভাবিক হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ৮ অক্টোবর তাকে রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসা-সংশ্লিষ্টরা বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন রোগীর। এর পর সেখানে তাকে আমাশয় ও ডায়রিয়ার চিকিৎসা দেওয়া হয়। ৯ অক্টোবর চিকিৎসাপত্রে কে-ওয়ান ইনজেকশন (জিরো পয়েন্ট ৫ এমএম) লিখে দেন চিকিৎসক। অথচ নার্স কেটি-ওয়ান ইনজেকশন এনে দেওয়ার স্লিপ ধরিয়ে দেন। দুপুর সোয়া ২টায় ইনজেকশনটি পুশ করার পরপরই মিরান চিৎকার দিয়ে ওঠে।

এর পর নার্স ইনজেকশন আরও জোরে পুশ করে সিরিঞ্জে থাকা সব ওষুধ তার শরীরে দিয়ে দেন। এর পরপরই মিরানের মুখ কালচে হয়ে সে নিস্তেজ হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার এসে আইসিউ সেবা দেওয়ার কথা বলেন। এর পর আইসিউতে বেড খালি নেই জানিয়ে পার্শ্ববর্তী মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। এর আগেই শিশুর নড়াচড়া বন্ধ হয়ে যায়। সেখানে নেওয়ার পর চিকিৎসক মিরানকে মৃত ঘোষণা করেন।

মিরানের বাবা আরও জানান, সন্তানের মৃত্যুর কারণ খুঁজতে গিয়ে চিকিৎসকের দেওয়া প্রেসক্রিপশন আর নার্সের লেখা কাগজটি মিলিয়ে দেখতে পান, ওষুধের পার্থক্য রয়েছে। চিকিৎসক যে ইনজেকশন দেওয়ার কথা বলেছিলেন, তার পরিবর্তে অন্য ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সামনে বিষয়টি তুলে ধরলে তারা ভুল মেনে নিতে অস্বীকার করে। এর পর ফার্মেসির সিসি ক্যামেরা ফুটেজটি নিয়ে চিকিৎসকদের দেখালে সেটিও তারা মানতে নারাজ। তাদের সব ধরনের প্রমাণ দেখানোর পরও চিকিৎসক বা নার্সের ভুল চিকিৎসা প্রদানের বিষয়টি মেনে নিতে নারাজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারা বলেছে, এটি তাদের চিকিৎসক বা নার্সের ভুল নয়।

সংবাদ সম্মেলনে মুবিন তাঁর সন্তানকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হত্যা করেছে দাবি করে বলেন, সন্তান যখন মৃত্যুশয্যায় তখন তাকে আইসিউতে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থাও করেননি অভিযুক্তরা। দূরের একটি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর দাবি, শিশুটির মৃত্যুর বিষয়টি আগে বুঝতে পেরে নিজেদের দায়মুক্তির জন্যই এমনটি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ সময় সরকারের কাছে সন্তান হত্যার বিচার দাবি করে ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর পর বিচার না পাওয়ার যে সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে সেটি থেকে মুক্তি ও চিকিৎসার নামে যারা অবৈধ বাণিজ্য চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান নিহতের বাবা।

এ ব্যাপারে রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক তারেক আজাদ বলেন, শিশুটি ডায়রিয়া এবং আমাশয় নিয়ে ভর্তি হয়। হাসপাতালের ভুলের কারণে শিশুটি মারা যায়নি। কেউ মারা গেলে ভুল চিকিৎসার এমন অভিযোগ করা হয় বলে তিনি জানান।