বিশ্বজুড়ে মশার আতঙ্কে বিপর্যস্ত মানুষ, বিশেষ করে ডেঙ্গু বা এডিস মশার আতঙ্কে। কিছু কিছু দেশে প্রতিদিনই ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছে। অনেকে বিষয়টি মহামারি হিসেবেও বিবেচনা করছেন।
মশাবাহিত অন্যান্য রোগের হাত থেকে বাঁচতে বিশ্বজুড়ে সারাবছরই চলে সচেতনতামূলক কর্মসূচি। মশা তাড়ানোর ধূপ, কয়েল, স্প্রে, র্যাকেটের ব্যবহার করেও নিস্তার মিলছে মশার কামড় থেকে। কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো, বিশ্বে এমন একটি দেশ আছে, যেখানে একটিও মশা নেই!
হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন। উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের পাড়ে অবস্থিত ইউরোপের দেশ আইসল্যান্ডে শুধু যে মশা নেই তা নয়, সচারচর সেখানে দেখা মেলো না কোনো পোকামাকড় কিংবা সাপেরও।
শিক্ষামূলক অ্যাপ ওয়ার্ল্ড অ্যাটলাসের মতে, চরম শীতল এ দেশটিতে প্রায় এক হাজার ৩০০ প্রজাতির প্রাণী থাকলেও মশার কোনো চিহ্ন নেই। অথচ এর প্রতিবেশী রাষ্ট্র গ্রিনল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও ডেনমার্কে মশার উপদ্রবের কথা শোনা যায়।
যে কারণে আইসল্যান্ডে মশার বংশবৃদ্ধি হয় না
দেশটি মশাবিহীন হওয়ার বিষয়ে বেশকিছু তথ্য পাওয়া যায়। বলা হয়, মশার বংশবৃদ্ধির জন্য অগভীর জলাশয় কিংবা জমে থাকা স্থির জলের প্রয়োজন হয়, যেখানে মশা ডিম পাড়ে ও সেই ডিম থেকে লার্ভা জন্মায়। আর মশার লার্ভা জন্মানোর জন্য একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট সময় ধরে জমে থাকা জলের প্রয়োজন হয়। কিন্তু মশার জীবনচক্র পরিপূরণের উপযোগী কোনো স্থির জলাশয় আইসল্যান্ডে নেই। ফলে সেখানে মশা বংশবৃদ্ধিও করতে পারে না।
আবার মশা না থাকার আরেকটি কারণ হলো আইসল্যান্ডের তাপমাত্রা খুবই কম। এমনকি দেশটির তাপমাত্রা এখানে কখনো কখনো মাইনাস ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছিতেও নেমে যায়। ফলে এখানে জল খুব দ্রুতই জমাট বেঁধে যায়। এ কারণে এখানে মশার উৎপাতও সম্ভব নয়। মূলত আইসল্যান্ডের জল, মাটি ও সাধারণ বাস্তুতন্ত্রের সংমিশ্রণ মশার বংশবৃদ্ধির জন্য সহায়ক নয়।
তবে এই দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে হুবহু মশার মতো দেখতে ‘মিজ’ নামক পোকা দেখতে পাওয়া যায়। তবে এ পোকা মশার মতো অতটা আক্রমণাত্মক নয়। মশা জামা-কাপড়ের উপর দিয়েও মানুষকে কামড়াতে পারে। কিন্তু মিজ শুধু নরম ত্বকের ওপর হামলা করতে পারে।
সূত্র : সিএনবিসি, ইন্ডিয়া টুডে