ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে রাজধানীর মানুষের মধ্যে জনসচেতনতা তৈরিতে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, কিন্ডারগার্টেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী ও শিশুদের সচেতন করতে কাজ করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে শিশুরা যেন ছোটবেলা থেকেই ট্রাফিক আইন মানা এবং রাস্তায় কীভাবে চলতে হয় এই বিষয়গুলোর ওপর হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারে সেজন্য ঢাকার বিভিন্ন স্থানে চিলড্রেন’স ট্রাফিক পার্ক তৈরি করা হবে। জাইকার অর্থায়নে ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে চিলড্রেন’স ট্রাফিক পার্ক তৈরি করতে যাচ্ছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ।
গতকাল (২৮ মে) মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)-র মিডিয়া সেন্টারে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এবং জাইকার যৌথ উদ্যোগে ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে গৃহীত উদ্যোগ নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-দক্ষিণ) এস এম মেহেদী হাসান।
মেহেদী হাসান বলেন, নতুন প্রজন্মকে শৈশব থেকেই ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হাতে কলমে শেখানো হবে সড়কে চলাচলের নিয়ম। চিলড্রেন’স ট্রাফিক পার্কে শিশুদের পাশাপাশি অভিভাবকদেরকেও ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সচেতন করে তোলা হবে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে নাগরিক সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে রাজধানীর ট্রাফিক সমস্যা সমাধানে নানামুখী কার্যক্রম গ্রহণ করেছি।
তিনি আরও বলেন, উন্নয়ন সহযোগী জাইকা ডিএমপির সঙ্গে ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়নে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। এ লক্ষে গত দুই বছর যাবৎ জাইকা ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তা ও সদস্যদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান, ডাটা সংগ্রহ ও অ্যানালাইসিস বিষয়ে কাজ করছে। সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে সেটা হচ্ছে সামগ্রিকভাবে সকলের মধ্যে ট্রাফিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং সড়ক নিরাপত্তা ও রাস্তা ব্যবহারে ট্রাফিক আইনের ব্যাপারে সর্বস্তরে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। জাইকা এ বিষয়গুলো নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় মডেল হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। জাপান সরকার ১৯৬০ সাল থেকে এ কাজগুলো করে যাচ্ছে।
ট্রাফিক পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, জাইকা ও ডিএমপির যৌথ উদ্যোগে বেশকয়েক বছর ধরেই বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, কিন্ডারগার্টেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী ও শিশুদের সচেতন করতে কাজ করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে শিশুরা যেন ছোটবেলা থেকেই ট্রাফিক আইন মানা এবং রাস্তায় কীভাবে চলতে হয় এই বিষয়গুলোর ওপর হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারে সেজন্য ঢাকার বিভিন্ন স্থানে চিলড্রেন’স ট্রাফিক পার্ক তৈরি করা হবে। জাইকার সহযোগিতায় ডাটা অ্যানালাইসিসের ক্ষেত্রে বিশেষ করে যানজট কোথায় হচ্ছে, কোথায় দুর্ঘটনা বেশি হচ্ছে, এই হটস্পটগুলো নির্ধারণের ক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করে ডাটা সংগ্রহ করে সেগুলো অ্যানালাইসিস করে সমাধান কোথায় সে বিষয়ে আমরা গুরুত্বারোপ করছি।
তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে জাইকার ঢাকা রোড ট্রাফিক সেফটি প্রজেক্ট (ডিআরএসপি)-এর আওতায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ১৩ জন কর্মকর্তা জাপানে ‘ঢাকা রোড ট্রাফিক সেফটি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। গাড়ি চালক, পথচারী ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে ট্রাফিক আইন ও শৃঙ্খলা বিষয়ে সচেতন করে তুলতে রাস্তার পাশেই ছোট ছোট আকারে ‘ট্রাফিক এডুকেশন রিসার্চ সেন্টার’ গড়ে তোলা হবে। ইতোমধ্যে মোহাম্মদপুরে একটি ট্রাফিক এডুকেশন সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে সেখানে পথচারী থেকে শুরু করে গাড়ি চালকদের ৩০ থেকে ৪৫ মিনিটের একটি সেশনে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, ট্রাফিক সিগন্যাল অটোমোশনের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দুই সিটি করপোরেশনের সাথে আলোচনা হচ্ছে। অচিরেই ট্রাফিক সিগন্যাল অটোমোশনের কাজ শুরু হবে।