লিবিয়ায় স্মরণকালের শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘ড্যানিয়েলের’ তাণ্ডবে সুনামির মতো উপকূলীয় অঞ্চলের বহু মানুষ সাগরে ভেসে যায়। সবেচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত উত্তরপূর্বাঞ্চলের মানুষ বুঝতেই পারেনি এর ভয়াবহতা কতটুকু। এখন পর্যন্ত ৫ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন, নিখোঁজ অন্তত ১০ হাজার।
রবিবার দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল। এর তাণ্ডবে ভেসে যায় ঘর-বাড়ি, যান বাহনসহ বহু গবাদি পশু। ভারী বৃষ্টিতে দুইটি বড় বাঁধ ভেঙে ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে। এতে আরও তলিয়ে যায় লোকালয়।
লিবিয়ায় আন্তর্জাতিক রেড ক্রস এবং রেড ক্রিসেন্টের প্রতিনিধি দলের প্রধান তামের রমাদান মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় সাংবাদিকদের নিখোঁজের সংখ্যাটা জানানোর চেষ্টা করেছেন। বলেন, ‘মৃত্যুর তালিকা দীর্ঘ’।
গতকাল লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই দুর্যোগে অন্তত ৫ হাজার ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে সিএনএন স্বাধীনভাবে মৃত্যুর সংখ্যা বা নিখোঁজদের যাচাই করতে সক্ষম হয়নি। নিহত এবং নিখোঁজদের মধ্যে অন্য দেশের নাগরিকও রয়েছেন। এ প্রসঙ্গে উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় শহর তোব্রুকের কর্মকর্তারা বলেন, অন্তত ১৪৫ জন মিসরীয় আছেন।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পূর্বের শহর ডেরনা। পুরো শহরটি কাঁদায় তলিয়ে আছে। সবকিছু শেষ করে দিয়ে গেছে ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা। এখানেই ৬ হাজারের মতো নিখোঁজ। শহরের আশপাশের এলাকাগুলোও ঢেউয়ে ভেসে গেছে বলে ধারণা করছে কর্তৃপক্ষ।
মৃতদেহ অনেক জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। চেনার কোনও উপায় নেই। উদ্ধার তৎপরতা চললেও রাস্তা ঘাট ধসে গেছে। এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়ার পথ বন্ধ। এদিকে চিকিৎসক সংকটে প্রাথমিক সেবা পেতেও ভুগতে হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্তদের।
লিবিয়ায় চলতি বছর মারাত্মক গরমের পর বৃষ্টি, তারপরও এমন ঘূর্ণিঝড় তাণ্ডব চালায়। এটি জলবায়ু পরিবর্তনের একটি অন্যতম প্রভাব মনে করছেন জার্মানির লাইপজিগ বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ু বিজ্ঞানী এবং আবহাওয়াবিদ কার্স্টেন হাউস্টেইন।
সূত্র: সিএনএন