আজ ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ তারিখের প্রথম আলো পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় ‘বন ডুবিয়ে প্রভাবশালীদের হ্রদ’ শিরোনামের খরবরটি প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়; মাছ চাষের জন্য চট্টগ্রামে একটি বনের প্রায় আড়াই হাজার একর বনভূমি ডুবিয়ে কৃত্রিম হ্রদ তৈরি করেছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। বনটি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া এবং সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকায়। এটি বড়হাতিয়া বন নামে পরিচিত। এই বনের একটি অংশ সংরক্ষিত, আরেকাংশ রক্ষিত। আইনে সংরক্ষিত বনে হ্রদ তৈরি তো দূরের কথা, সেখানে প্রবেশই নিষিদ্ধ। আর রক্ষিত বনে অনুমতি সাপেক্ষে প্রবেশ করা যায়। বড়হাতিয়া বনের যে জায়গায় হ্রদ তৈরি করা হয়েছে, তা সংরক্ষিত ও রক্ষিত দুই অংশের মধ্যেই পড়েছে। হ্রদটি তৈরি করা হয়েছে বনের সোনাকানিয়া নামের একটি ছড়ায় বাঁধ দিয়ে। বাঁধের দৈর্ঘ্য ২০০ ফুটের মতো। প্রস্থ ২০ ফুট ও উচ্চতা ১০০ ফুট।
হ্রদ তৈরির ফলে গামারি, সেগুন, চিকরাশি, অর্জুনসহ বিভিন্ন প্রজাতির ছোট-বড় প্রায় পাঁচ লাখ গাছ মারা গেছে। ডুবে যাওয়া জায়গার মধ্যে বন্য হাতির চলাচলের পথ ছিল। খ্যাঁকশিয়াল, শজারু, বন্য শূকর, বনমোরগ, ময়ূর, গুইসাপ, অজগরসহ বিভিন্ন বন্য প্রাণী এবং নানা প্রজাতির প্রাণী বাস করত সেখানে।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, বাঁধ নির্মাণ ও হ্রদ তৈরিতে জড়িত ব্যক্তিরা ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাঁরা নেজামুদ্দীন নদভীর একান্ত সচিব ও জেলা পরিষদের সদস্য এরফানুল করিমের ঘনিষ্ঠ।
বৃক্ষণিধনের কারণে অক্সিজেন স্বল্পতা দেখা দেয়, বায়ু দূষণ বৃদ্ধি পায় বহুগুনে। যেখানে একটি পরিপূর্ণ গাছ বছরে ৪৮ পাউন্ড হারে কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে এবং যে পরিমাণ অক্সিজেন প্রদান করে তাতে অন্তত দুজন মানুষ নিঃশ্বাস নিতে পারে। স্বাভাবিকভাবে চিন্তা করলে এ কাজটি মানুষ হত্যার থেকেও ভয়াবহ। কারণ একজন মানুষ বছরে সাধারণত ২ দশমিক টন কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন করে গ্রিনহাউস ইফেক্টকে ত্বরান্বিত করে।
বাপা পরিবেশ ধ্বংসকারি সকল ধরণের উন্নয়নের বিপক্ষে। কারণ পরিবেশ বাঁচলে দেশের মানুষ বাঁচবে। পরিবেশ ও মানুষের সহাবস্থানই উৎকৃষ্ট পন্থা। পরিবেশকে বিপন্ন করে মানব সভ্যতা কল্পনাও করা যায়না।
আমরা মনে করি দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যর্থতাকে পুঁজি করে দুষ্কৃতিকারীরা দেশের পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকান্ড করে থাকে। এঘটনার আমরা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি একইসাথে আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে দোষীদের আইনের আয়তায় এনে কঠোর এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।