ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৪ জানুয়ারি ২০২৪
  • অন্যান্য

সরকারি ছুটির তালিকায় বিশ্বে ৫ম শীর্ষ দেশ বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
জানুয়ারি ৪, ২০২৪ ১০:২০ পূর্বাহ্ণ । ১৫৫ জন

আদিকাল থেকেই বাঙালি সমাজ আদ্যোপান্ত দলবদ্ধ। পরিবার-আত্মীয়-বন্ধু-স্বজন নিয়েই আমরা আমাদের চারপাশ সাজাতে অভ্যস্ত। তাই হয়তো একটুখানি ফুরসত মিললে খাওয়া দাওয়া আর আড্ডাপ্রবণ হয়ে উঠি আমরা। রবীন্দ্রনাথও বলেছেন, ছুটি মানেই কেয়াপাতার নৌকো গড়ে ফুলে ফুলে সাজিয়ে দেওয়া। যা ভালো লাগে, মন যা চায়, তাই করা।

অথচ কর্মব্যস্ততায় ডুবে থাকতে গিয়ে পরিবারকে সময় না দেয়ার অভ্যাস গড়ে আমরা হয়ে পড়ি ব্যক্তিকেন্দ্রিক। এমনকি নিজেকে সময় দেয়ার সুযোগও জোটে না। এমন পরিস্থিতিতে ‘সরকারি ছুটি’ হয়ে ওঠে ভরসা। বিশেষ কিছু পেশার খাতিরে এসব ছুটি নিয়মিত না মিললেও সাধারণভাবে সবাই সরকারি ছুটিগুলো অস্থির জীবনে এক ঝলক প্রশান্তির মতোই গ্রহণ করে।

সরকারি ছুটি, জাতীয় ছুটি বা রাষ্ট্রীয় ছুটি বলতে মূলত বিভিন্ন ক্যালেন্ডারের হিসেবে এমন কিছু বিশেষ দিনকে বোঝানো হয়, যে দিনগুলোতে সব ধরনের দাপ্তরিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখা আইনে স্বীকৃত। তবে বিশ্বের একেক দেশে সরকারি ছুটির হিসেব একেক রকম। বৈশ্বিক কিছু দিনের পাশাপাশি নিজস্ব কিছু রাষ্ট্রীয় উপলক্ষ, বার্ষিকী, গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনা ও ধর্মীয় উৎসবভেদে এই তারতম্য হয়।
এমনই তারতম্য নিয়ে বৈশ্বিক তথ্য-উপাত্ত বিষয়ক মাধ্যম ওয়ার্ল্ড অব স্ট্যাটিস্টিকসের করা তালিকায় বছরে সর্বোচ্চ সংখ্যক সরকারি ছুটির তালিকায় যৌথভাবে পঞ্চম স্থানে আছে বাংলাদেশ। নতুন বছরে ছুটি মিশর ও বাংলাদেশে ২২ দিন ছুটি নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ তালিকায় সর্বোচ্চ ৩৫ দিন ছুটি ঘোষণা করে প্রথম স্থানে রয়েছে নেপাল। মাত্র ৮ দিন ছুটি ঘোষণা করে সবার নিচের স্থানে থাকা দেশটি মেক্সিকো। আর ৩২ দিন ছুটি নিয়ে দ্বিতীয় মিয়ানমার ও তৃতীয় সর্বোচ্চ ছুটি ইরানে ২৬ দিন। চতুর্থ স্থানে থাকা শ্রীলংকায় ছুটি ২৫ দিন।

এছাড়া কম্বোডিয়া ও ভারতে ২১ দিন; আর্জেন্টিনা ও লেবাননে ১৯; কলম্বিয়া ও ফিলিপাইনে ১৮; আইসল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, পাকিস্তান, কাজাখস্তান ও থাইল্যান্ডে ১৬ দিন; অস্ট্রিয়া, চিলি, ডেনমার্ক, নরওয়ে, দক্ষিণ কোরিয়া, তুর্কি ও ভেনিজুয়েলায় ১৪ দিন; ফিনল্যান্ড, পোলান্ড, স্পেন ও চেক রিপাবলিকে ১৩ দিন; ইতালি, সুইডেন ও ইউক্রেনে ১২ দিন; চিন, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও যুক্তরাষ্ট্রে ১১ দিন; অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি ও কানাডায় ১০-১৩ দিন, বেলজিয়াম, এস্তোনিয়া ও আয়ারল্যান্ডে ১০ দিন, ব্রাজিলে ৯-১২ দিন, তাইওয়ানে ৯ এবং যুক্তরাজ্যে ৮-১০ দিন সরকারি ছুটি পাবেন কর্মজীবীরা।

যুক্তরাষ্ট্রের এক গবেষণায় জানা গেছে, বছরে একবার ছুটিতে বেড়াতে গেলে হার্টঅ্যাটাকে মৃত্যুর আশঙ্কা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে। এ ছাড়া ছুটি কাটালে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি, বিপাকীয় রোগ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে। যদিও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কাজের ফাঁকে এই ছুটিগুলো মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই জরুরি। তবে সরকারি ছুটি বেশি হলে তা একটি দেশের অর্থনৈতিক খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলেও মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। কেননা ওই সময়টায় সব ধরনের কাজ বন্ধ থাকে। থেমে থাকে বড় বড় সব আর্থিক লেনদেনও। এতে বিশেষ করে ব্যাংকিং ও অর্থনৈতিক খাতগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।