ঢাকাবুধবার , ২৯ নভেম্বর ২০২৩
  • অন্যান্য

ভারত

১৭ দিন পর সুড়ঙ্গে আটকে পড়া ৪১ শ্রমিক উদ্ধার

পাবলিক হেলথ ডেস্ক
নভেম্বর ২৯, ২০২৩ ১১:২২ পূর্বাহ্ণ । ১৪৮ জন

১৬ দিন ধরে মাটির নিচে অন্ধকারে আটকা পড়ে থাকা ৪১ শ্রমিকের সবাইকে বের করে আনা সম্ভব হয়েছে।

ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের উত্তরকাশীতে ধসে পড়া সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে মাটির নিচে অন্ধকারে আটকা পড়ে ছিল ৪১ জন শ্রমিক। বদ্ধ সুড়ঙ্গে তারা আটকে ছিল টানা ১৭ দিন। গত ১২ নভেম্বর ভোরে সুড়ঙ্গে ধস নামলে তারা আটকে পড়েন। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা গেলেও উদ্ধার করা যাচ্ছিল না।

সুড়ঙ্গে ধস নেমে ৬০ মিটার ধ্বংসস্তূপের পিছনে আটকে ছিলেন ওই শ্রমিকেরা। যন্ত্রের মাধ্যমে সেই ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু কখনো সুড়ঙ্গে ধস নেমে, কখনও যন্ত্র খারাপ হয়ে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়েছিল। গত শুক্রবার আমেরিকান খননযন্ত্রটি ধ্বংসস্তূপের ভেতরে লোহার কাঠামোয় ধাক্কা খেয়ে ভেঙে যায়। ফলে উদ্ধারকাজ বন্ধ হয়ে যায়। ওই ২৫ টন ওজনের ভাঙা যন্ত্রের অংশগুলো বের করে আনাই ছিল উদ্ধারকারীদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ।

এরপর নিষিদ্ধ ‘র‌্যাট-হোল মাইনিং’ বা ‘ইঁদুরের গর্ত’ পদ্ধতি অবলম্বন করে উদ্ধারকাজ শুরু হয়। খননে পারদর্শী প্রায় দুই ডজন শ্রমিক হাতের সাহায্যে গাঁইতি, হাতুড়ি, শাবল দিয়ে সুড়ঙ্গের শেষ অংশটুকু খোঁড়া শুরু করেন। এরপর সুরঙ্গের ভেতরে ৯০ সেন্টিমিটার (তিন ফুট) ব্যাসের একটি পাইপ বসানো হয়। তার পরই শুরু হয় উদ্ধার তৎপরতা। সুড়ঙ্গের ভেতরে স্ট্রেচার নিয়ে একে একে শ্রমিকদেরকে বের করে আনার কাজ শুরু হয়। সুড়ঙ্গ খোঁড়ার এ কাজে নেতৃত্ব দিয়েছেন সুড়ঙ্গ বিপর্যয় মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ আর্নল্ড ডিক্স। সপ্তাহখানেক আগে ভারত সরকার অস্ট্রেলীয় এই বিশেষজ্ঞকে নিয়ে আসে।

শ্রমিকদেরকে বের করতে সুড়ঙ্গের ধসে পড়া অংশে পৌঁছান রাজ্য এবং জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা বাহিনীর কর্মকর্তারা। প্রথমেই বের করে আনা হয় দুই শ্রমিককে। এরপর বাকিদেরকেও একে একে বের করে এনেছেন উদ্ধারকারীরা। প্রথম শ্রমিক সুড়ঙ্গ থেকে বেরোনোর খবর আসতেই বাইরে অপেক্ষমান সবার মাঝে আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে। তার প্রথম ছবি প্রকাশ করেন ঘটনাস্থলে থাকা বিবিসি’র এক সাংবাদিক।

উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলায় ব্রহ্মখাল- যমুনাত্রী জাতীয় মহাসড়কের অংশে নির্মাণাধীন একটি টানেলের কিছু অংশ ধসে পড়ে কিছু শ্রমিক আটকা পড়েন। পরে জানা যায়, আগের রাতে সেখানে ৫০ থেকে ৬০ শ্রমিক প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ ওই হাইওয়ে টানেলটির নির্মাণ কাজ করছিল।

ভারতের পাহাড়ি রাজ্য উত্তরাখণ্ডে প্রায়ই ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। এটি ভূমিকম্প এবং বন্যাপ্রবণ এলাকাও বটে। তার মধ্যে পাহাড়ের ভেতর দিয়ে দ্রুত নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাওয়ার কারণেই টানেল ধসের এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়।