জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণে সহায়ক আইন ও নীতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করলেও তামাক কোম্পানীগুলো এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করছে। প্রতিবছর তামাকের কারণে প্রাণ হারাচ্ছে ১ লক্ষ ৬১ হাজার মানুষ। পরিবেশ ও অর্থনীতিও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। সার্বিক ক্ষতির বিষয় বিবেচনায় সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি শক্তিশালী করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কিন্তু তামাক কোম্পানীগুলো নানা অসত্য এবং ভিত্তিহীন প্রচারনার মাধ্যমে আইন শক্তিশালীকরণ প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করার জন্য চেষ্টা করছে।
উক্ত বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে গত ১৬ মার্চ ২০২৫ বেলা ১টায় খুলনা নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডের কমিউনিটি লিডারদের সাথে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এর উদ্যোগে তামাক কোম্পানীর হস্তক্ষেপ প্রতিহতকরণ বিষয়ক একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সিয়াম এর নির্বাহী পরিচালক মাসুম বিল্লাহ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের স্বাস্থ্য অধিকার বিভাগের প্রধান সৈয়দা অনন্যা রহমান।
মূল প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, তামাক কোম্পানীর প্রভাব থেকে নীতি সুরক্ষায় ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) এর আর্টিক্যাল ৫.৩ একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। রাষ্ট্রের আইন ও পলিসি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে তামাক কোম্পানিগুলো নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করছে। তামাক নিয়ন্ত্রণে কমিউনিটি সম্পৃক্ত হয়ে প্রশাসনকে অবহিত করে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে “ওয়াচ ডগ” হিসেবে কাজ করতে পারে। পাশপাশি তামাক নিয়ন্ত্রণে সহায়ক পলিসি গ্রহনের বিষয়েও প্রশাসনকে সুপারিশ প্রেরণ করতে পারে।
সভায় সম্প্রতি, তামাক কোম্পানির প্রভাব থেকে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক নীতি সুরক্ষায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এফসিটিসি আর্টিক্যাল ৫.৩ অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি উল্লেখ করে ধন্যবাদ জানানো হয়। অংশগ্রহণকারীরা কমিউনিটিতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট তুলে ধরার উপর গুরুত্বারোপ করেন। অতি দ্রুত তারা এ বিষয়ে প্রশাসনের সাথে স্বাক্ষাৎ করবেন বলেও জানান।
সভাপতি জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে বলেন, আগামী প্রজন্ম যাতে নেশামুক্ত পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে হলে সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতির নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি অধিক শক্তিশালী করতে হবে। সরকারের কাছে আমাদের আহবান, তামাক কোম্পানীর কুট কৌশল প্রতিহত করে দ্রুত বিদ্যমান আইনটি শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হোক।