বাংলা নববর্ষ, অর্থাৎ পহেলা বৈশাখ, বাঙালির জাতীয় জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ দিন। এটি শুধুমাত্র একটি নতুন ক্যালেন্ডার বছরের সূচনা নয়, বরং বাঙালির সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও আত্মপরিচয়ের এক উৎসবমুখর প্রকাশ। প্রতিবছর ১৪ই এপ্রিল (১লা বৈশাখ) এই দিনটি সারাদেশে বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়। এটি মূলত একটি ধর্মনিরপেক্ষ ও জাতীয় উৎসব, যা সকল ধর্ম, বর্ণ ও শ্রেণির মানুষ একত্রে উদযাপন করে থাকে।
পহেলা বৈশাখের দিন মানুষ নতুন পোশাকে সজ্জিত হয়, বিশেষ করে সাদা-পালিশাড়ি ও লাল পাঞ্জাবি জনপ্রিয়। ঢাকায় রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ গান, মঙ্গল শোভাযাত্রা, এবং বৈশাখী মেলা এই উৎসবকে দেয় এক অনন্য মাত্রা। নানা রকম পিঠা, পানতা-ইলিশ, ও হস্তশিল্পের পসরা বাংলার লোকজ ঐতিহ্য তুলে ধরে।
বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নববর্ষ উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গান, নৃত্য, আবৃত্তি, ও নাটকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বাংলা সংস্কৃতিকে তুলে ধরে। খাবার স্টল, হস্তশিল্প প্রদর্শনী, ও লোকজ খেলাধুলাও এই উৎসবকে আরো রঙিন করে তোলে।
বাংলা নববর্ষ শুধু একটি উৎসবই নয়, এটি বাঙালির আত্মপরিচয়ের প্রতীক। এই উৎসব আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।