রাজধানীতে যক্ষ্মা (টিবি) মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে অংশীজনদের (স্টেকহোল্ডার) করণীয় বিষয়ে এক কর্মশালা শেষ হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটায় মিরপুর ১২ নম্বর সেক্টরের দিশা ট্রেনিং সেন্টারে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
যক্ষ্মা রোগ সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি এ রোগ কীভাবে নির্মূল করা যায় এসব নিয়ে আলোচনা করেন আর্ক ফাউন্ডেশনের সিনিয়র রিসার্চ এসিস্ট্যান্ট সাখাওয়াত হোসেন রানা ও প্রতিষ্ঠানটির টিবি প্রজেক্টের মনিটরিং কর্মকর্তা ফিরোজ মৃধা।
এসময় তারা বলেন, যক্ষ্মা একটি পুরোনো জীবাণুঘটিত সংক্রামক ব্যাধি। বায়ুবাহিত রোগ ও হাঁচি-কাশির মাধ্যমে সংক্রমিত হয়ে থাকে। প্রধানত ফুসফুস আক্রান্ত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে বাংলাদেশে প্রতিবছর ৩ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হন।
সরকার, এনজিও ও বিভিন্ন সেবামূলক সংস্থা বিনা মূল্যে যক্ষ্মার রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করলেও যক্ষ্মা আক্রান্তের হার তেমন একটা হ্রাস করা যাচ্ছে না। কারণ অধিকাংশ মানুষের ধারণা, কয়েকদিন ঔষধ সেবন করলেই যক্ষ্মা থেকে মুক্তি পওয়া যায়।
এছাড়া, বেশসংখ্যক যক্ষ্মারোগীকে শনাক্ত করা যায় না। কারণ, তাঁরা সচেতন নন, আজীবন যক্ষ্মার জীবাণু বহন করেই মারা যান। যক্ষ্মার জীবাণু যে কেবল ফুসফুসকে আক্রান্ত করে তা নয়, এটি মস্তিষ্ক থেকে শুরু করে, ত্বক, লিভার, অন্ত্র, কিডনি, হাড়সহ দেহের যেকোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গে সংক্রমণ হতে পারে।
ইতোমধ্যে সরকারসহ বিভিন্ন সেবামূলক সংস্থা বিনা মূল্যে যক্ষ্মার চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করেছে। তবে এ রোগ নির্মূলে প্রয়োজন অধিকতর সচেতনতা। একনাগাড়ে নিয়মিত ওষুধ সেবনের মাধ্যমে যক্ষা প্রতিরোধ সম্ভব। বিনা মূল্যে চিকিৎসা–সম্পর্কিত সব বিষয়ে সর্বস্তরের মানুষকে অবগত করতে হবে। এজন্য অংশীজন, জনপ্রতিনিধিসহ সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।
শিক্ষাক, ইমাম, হাউজিং সোসাইটির সদস্য, ক্লাব সদস্য, ওয়ার্ড কমিশনার কার্যালয়ের কর্মী, মাঠকর্মী ও বস্তিনেত্রী ৩০ জন কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।
STOR TB Partnership/UNOPS এর সহায়তায় আর্ক ফাউন্ডেশন (ARK) ও খুলনা মুক্তি সংস্থা (KMSS) কর্মশালাটি বাস্তাবায়ন করে। আর্ক ফাউন্ডেশন বর্তমানে রাজধানীর উত্তর ও দক্ষিণের ১২টি ওয়ার্ডে যক্ষা নিরাময়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।