শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য একটা বড় সমস্যা। এ থেকে শুধু যে তারা কষ্ট পায় তা নয়, ব্যথা থেকে শুরু করে মলের সঙ্গে রক্তপাত পর্যন্ত হতে পারে। পায়ুপথের মুখ ফেটে যেতে পারে। শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কয়েকটি অভ্যাসের পরিবর্তনই যথেষ্ট।
১. প্রথম ৬ মাস শুধু মায়ের বুকের দুধ ও তারপর ২ বছর পর্যন্ত অন্যান্য খাবারের সঙ্গে মায়ের দুধ দিলে এই সমস্যা অনেকটাই কমে। গরুর দুধ বা ফর্মুলা দুধ কোষ্ঠকাঠিন্যের একটি অন্যতম কারণ। সুতরাং বাদ দেয়া উত্তম।
২. যে কোন ধরনের মাংস, প্রতিদিন বা বেশি বেশি খেলে পায়খানা কষা ও শক্ত হয়।
৩. ব্লেন্ডার মেশিনে গুড়ো করে তৈরী করা মিহি খাবার, বেশি তেলে ভাজা খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়ায়। তাই তা খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দেয়া উচিত।
৪. বেশি করে শাকসবজি, ফল, ফলের রস, আঁশযুক্ত খাবার দিতে হবে। ছোটবেলা থেকেই এসব খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
৫. বাজার থেকে কেনা খাবার, টিনের খাবার, ফাস্ট ফুড, বার্গার পায়খানা কষা বাড়িয়ে দেয়।
৬. প্রচুর পানি ও অন্যান্য পানীয় পান করতে উৎসাহ দিন। সকালে প্রতিদিন একগ্লাস পানি খালি পেটে পান করলে পায়খানা হবার রিফ্রেক্স তৈরী হয় এবং ভালো ফল পাওয়া যায়।
৭. অতিরিক্ত দুধ, মাংস ও মাংসের তৈরি খাবার এড়িয়ে চলা ভালো। মাছ বরং উপকারী।
৮. খাবার খাওয়ানোর ৩০ মিনিটের মধ্যে নিয়মিতভাবে ৫-১০ মিনিটের জন্য শিশুকে টয়লেটে বসানোর অভ্যাস করুন। অথবা প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে শিশুকে টয়লেটে বসানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৯. শিশুর পেটে হালকা ম্যাসাজ করলে কিছুটা উপকার হয়। এতে পেট ও নাড়ির পেশি শিথিল হয়। হালকা গরম পানিতে গোসল করানো ভালো। এতেও পেশি শিথিল হল।
১০. অনেক সময় শিশুরা ইচ্ছে করে টয়লেট আটকে রাখে। নিয়মিত টয়লেট করলে তাকে পুরষ্কৃত করুন, উৎসাহ দিন কিন্তু না করলে তিরস্কার করবেন না।
১১. শিশুদের খেলাধুলা ও হাঁটাহাঁটির সুযোগ করে দিন, এতে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে।
১২. পর পর ২-৩ দিন টয়লেট না হলে মলের পথে গ্লিসারিন সাপোজিটরি দেওয়া যায়। এতে কাজ না হলে চিকিৎকের পরামর্শ নিন।
নোট: শিশু বিশেষজ্ঞ অধ্যপক ডা: মো: আবিদ হোসেন মোল্লার লিখিত ‘শিশু স্বাস্থ্যের খুঁটিনাটি’ বই থেকে নেওয়া হয়েছে তাঁর অনুমতিক্রমে।