ঢাকাশনিবার , ২৫ জানুয়ারি ২০২৫

পাবলিক প্লেস শতভাগ ধূমপানমুক্ত রাখার জন্য প্রচারণা

নিজস্ব প্রতিবেদক
জানুয়ারি ২৫, ২০২৫ ১১:০৮ অপরাহ্ণ । ৫৯ জন

পাবলিক প্লেসসমূহ শতভাগ ধূমপানমুক্ত রাখার জন্য প্রচারণা শুরু করেছে বাংলাদেশ সরকার। ভাইটাল স্ট্রাটেজিস এর কারিগরি সহায়তায় ‘শতভাগ ধূমপানমুক্ত পাবলিক প্লেস’ শীর্ষক এ প্রচারণার অংশ হিসাবে নির্মিত বিজ্ঞাপন বাংলাদেশ টেলিভিশন ও স্টপ টোব্যাকো বাংলাদেশ -এর মাধ্যমে সামাজিক প্ল্যাটফরমে প্রচার করা হবে। এছাড়া মাসব্যাপী এ প্রচারণাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন: ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্স, লিংকইন, ইউটিউব ইত্যাদি মাধ্যমে বিভিন্ন কন্টটেন্ট নির্মাণ ও পোস্ট করা হবে। আজ শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিড়ি-সিগারেটের ধোঁয়ায় ৭০০০-এর বেশি ক্ষতিকর রাসায়নিক ‍উপাদান রয়েছে, তন্মধ্যে ২৫০টি মারাত্মক ক্ষতিকর এবং ৭০টির অধিক মানবদেহে ক্যান্সার সৃষ্টির সঙ্গে জড়িত। পরোক্ষ ধূমপানের কারণে হৃদরোগ, স্ট্রোক, ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদী রোগ (এম্ফাইজিমা, এজমা), ডায়বেটিস ইত্যাদি প্রাণঘাতী রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। পরোক্ষ ধূমপানের প্রভাবে পৃথিবীতে ১৩ লক্ষাধিক ও বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির গবেষণার তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশে প্রায় ২৬ হাজার মানুষ মারা যায়। বিপুল পরিমাণ মানুষের অনাকাঙ্খিত মৃত্যু কমাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) ও এর আর্টিকেল ৮-এ পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনকে শতভাগ ধূমপানমুক্ত করার কথা বলা হয়েছে।

এ প্রচারণায় জনসাধারণকে পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে কাজ করছে। এতে একটি রেস্তোরাঁর দৃশ্য প্রদর্শিত হয়েছে যেখানে ধূমপানের এলাকা ও ধূমপানমুক্ত এলাকা আলাদা করা হয়েছে। প্রথমে, একটি ভালভাবে সাজানো রেস্তোরাঁ দেখানো হয়, যেখানে লোকেরা বন্ধু এবং পরিবারের সাথে খাবার খাচ্ছে। একটি আলাদা ধূমপানের জোনও রয়েছে, যেখানে কাচের দরজায় “Smoking Zone” লেখা রয়েছে।

এরপর ধূমপান জোনে সোফায় বসে একজন সিগারেট ধরাচ্ছেন এবং তার পাশে বসা একজন আগুন দিয়ে তার সিগারেট ধরাচ্ছেন। একজন সিগারেটের ধোঁয়া টানেন এবং বাতাসে ধোঁয়া ছেড়ে দেন। পরে দেখা যায়, এ ধোঁয়া ধূমপান জোন থেকে ধূমপানমুক্ত এলাকায় চলে আসে, যেখানে একটি পরিবার তাদের খাবারের জন্য অপেক্ষা করছে। এই সময় পরিবারের নারী ও শিশুরা পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন। নিশ্বাসে সিগারেটের বিষধোঁয়া টেনে নিচ্ছেন, এবং তার মুখের মধ্যে ধোঁয়ার প্রবাহ কম্পিউটার গ্রাফিক্সের মাধ্যমে শরীরে প্রবাহিত হওয়া, রক্তের প্রবাহে বাধা তৈরি করা, এবং হৃদরোগের ঝুঁকি সম্পর্কে দেখানো হয়।

অবশেষে একটি ভয়েসওভার জানায় যে, পরোক্ষ ধূমপান শ্বাসের মাধ্যমে আমাদের শ্বাসনালী, রক্তনালী এবং হৃদযন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এটি স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে। এ বিজ্ঞাপনের শেষে বার্তা দেওয়া হচ্ছে, পাবলিক প্লেসে সম্পূর্ণ ধূমপান মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

ভাইটাল স্ট্রাটেজিস এর সিনিয়র কনসালটেন্ট মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এটি একটি সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন যা পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতির কথা তুলে ধরে এবং জনসাধারণের জন্য ধূমপানমুক্ত স্থানের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছে। পাবলিক প্লেসে ধূমপান এলাকার বিধান অধূমপায়ীদের জন্য বিড়ম্বনার কারণ। শিশু-নারীসহ অধূমপায়ীদের পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি থেকে সুরক্ষায় পাবলিক প্লেসগুলোকে শতভাগ ধূমপানমুক্ত করা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ দ্রুত সংশোধন করা দরকার।

ভাইটাল স্ট্রাটেজিস এর টেকনিক্যাল এডভাইজার আমিনুল ইসলাম বলেন, পাবলিক প্লেস শতভাগ ধূমপানমুক্ত করা হলে ধূমপায়ীদের দীর্ঘসময় ধূমপান থেকে বিরত রাখা সম্ভব হবে এবং অধূমপায়ীরা ধূমপানমুক্ত পরিবেশ পাবে। তাই সকল পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহন শতভাগ ধূমপানমুক্ত রাখা জরুরি।